Monday, April 13, 2020

সন্দীপন চক্রবর্তী-র কবিতা






প্রহর, প্রহরগুলি

১.
চারদিক থমকে আছে
কিছু একটা হবে

কী হবেসেটা কেউ বলতে পারছে না

শুধু একটা অন্ধকার সাপ
আছড়েপিছড়ে মুচড়ে উঠছে বারবার

শব্দগুলো ছেঁড়া ফাটা
রক্তের কালো কালো ছোপ

শামুকেরা মুখ বের ক'রে
মেপে নিচ্ছে অনিশ্চিত পারদ

ঘর থেকে বেরোচ্ছে না কেউ

কিছু একটা ঘটবে মনে হয়


২.
মানুষ ভয়ে কুঁকড়ে গেলে
সমস্ত দাপট থেমে যায়।
পৃথিবী খুব শান্ত হয়ে আসে

আচমকা ভেসে ওঠে
নিজের অচেনা মুখ --
সে তখন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে
খানিক বোকার মতো মাথা চুলকায়
খানিক সঞ্চয় করে
কেন করেনিজেও জানে না

কুণ্ডলী পাকিয়ে তারা
নিরর্থ খবর শোনে,
গুজব ছড়ায়।
অল্পস্বল্প ইয়ার্কিও করে

তাদের গায়ের থেকে
ঝিরিঝিরি ঝিরিঝিরি
অনন্ত বাকল ঝরে পড়ে


৩.
তালা খুলে কোনো শব্দ বেরোতে পারে না
বাইরে পুলিশ

ট্রেন বাস ব্যাঙ্ক বা বাজার
এখন সমস্ত বন্ধ

ঘরের মেঝেতে শুধু হাড়গোড়ভাঙা এক অন্ধ আক্রোশ
ড্রপ খায়ড্রপ খেতে থাকে

তারপর একদিন দাঁড়ায় লাইন করে
ছোটবড়ভাঙাএলোমেলো

নিঃশ্বাস নেবার জন্য
ঘুমের মধ্যেও তারা পাশ ফিরে শোয়

এখনও তাদের ছুঁয়ে বেঁচেবর্তে থাকে
কিছু কিছু আহাম্মক বিফল মানুষ


৪.
ছোট্ট এক তুড়িতে ধ্বসে যায়
মানুষের সাজানো এ রঙচঙে বিরাট বাজার
বহুতল দম্ভগুলো ভয়ার্ত গুহা হয়ে ওঠে

হয়তো মানুষ তার কৃতকর্মের জের
অজান্তে বহন করে চলে
প্রজন্ম থেকে আরও প্রজন্মে ছড়িয়ে যায়
মধু মোহ বিষ --
দরজার বাইরে পুলিশ
বসিয়ে সেসব কথা অস্বীকার করে
অথচ গণৎকারে
সারাতে পারে না সেই বিকট অসুখ

অবোধ বা তীক্ষ্ণ ভাবুক
কেউ সে বৃত্তের থেকে বেরোতে পারে না
শুধু সে বৃত্তের
কাঁটাগুলো ধকধক করে ওঠে রাতের দেয়ালে

নিজস্ব খেয়ালে
মানুষ এখন আর চলতে পারে না।
তাকে বুঝে নিতে হয় ভূমি

তার হাতে বেজে ওঠে গ্রহতারাদের ঝুমঝুমি



1 comment:

একনজরে

সম্পাদকীয়

একটি বিষয়ে আমাদের সকলের একমত হতেই হবে ভিন্ন মতের ও ভিন্ন রুচির বহুস্তরকে সম্মান জানিয়েও, যে, আমরা এই মুহূর্তে প্রায়শ্চিত্ত করছি। মানুষ...

বেশিবার পড়া হয়েছে যেগুলি