শ্মশান
আর কিছু কথা নেই ভেবে মায়াযাতনার দেশে হেঁটে যাই
বিক্ষিপ্ত আলোর রঙে সহজেই জ্বলে যায় চোখ
প্রতিপক্ষ ছাড়া এই বিপুল দূরত্ব, ইশারার পথে
সোনালী চুলের মেয়ে উবু হয়ে আছে
কোলে তার কালো বেড়ালের চোখ,
জ্বলজ্বলে লোভাতুর মেঘ...
এ দৃশ্য বিধ্বস্ত করে তোলে আরও
আরও একবার দূরত্ব ক্ষীণ হয়ে আসে
মনেহয়, এ পথ মুখস্থ ছিল
মনেহয় পথটিকে মুখস্থের প্রয়োজন আছে
এপিটাফ
কবে যেন, দৃশ্য থেকে উঠে এসেছিল কথা ও অক্ষর!
তোমাকেই অনুবাদ ভেবে বারবার শব্দহীন এক পৃথিবীর কাছে
রেখে আসি ভূর্জপত্র
রেখে আসি দু'একটি সহজ শব্দ; পাথরের
অথচ পাওলো পাসোলিনির নাম শোন নি কখনও
অথচ গাঙচিল নামে ডাকেনি কখনও কোনও সুখী মানুষের ছায়া...
ইশারার লিপি বুঝে নিতে নিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে থেকেছে জল ও বায়ু
যাতায়াতভরা মৃত ল্যাম্পপোস্ট, সে-ও!
যা কিছু অনূদিত
এবার কী আমাদের বলে ফেলা ভালো!
যা কিছু উচ্চারিত তার দিকে মুখ করে বসে থাকো তুমি
তোমার কুয়াশা দেহ বড় হতে হতে বাক্যবদ্ধ ছুঁয়ে ফেলে ক্লান্ত সম্ভাবনা...
তোমার স্মৃতির দিকে মোড় নেয় মৃত মাছেদের গাল ও ফুলকো
পোষা বেড়ালের লোভ বাড়ে, ক্ষুধা বাড়ে...
একটা জন্ম বৃথা গেছে ভেবে দ্বিধাতুর নাগরিক মুখ চুকচুক, পশ্চিমের দিকে সরে যায়
তোমার সাধের ঘরে পেতে রাখা দই, মুড়ি-মুড়কির খিদে
অবেলার কাক এসে খাবে?
বিজ্ঞাপন
রূপকের কথা ভাবতে ভাবতে আমাদের ক্লান্তি আসে
মৃত্যু আসন্ন জেনেও প্রেম গাঢ়তর হয় আমাদের
অমলতাসের দিকে হেঁটে যায় পোষা বাঘ
তোমার যত্ন করে কেটে নেওয়া নখে লেগে থাকে রক্ত ও ময়ূরের বিরত সঙ্গম
আর তখনই হঠাৎ জলপ্রপাত নামে এ শহরে
ছোটবেলাকার গানে গোলাপি ঠিকানা ভিজে ওঠে
জল পেয়ে বেড়ে ওঠে দু'একটি বিরল চারগাছ
এরকম বিধ্বস্ত দৃশ্যের পথ আমাকে আড়ালে টেনে নিয়ে যায়। চুমু খায়
উদভ্রান্ত
একটি যন্ত্রণাকে পোষ মানাতে মানাতে কী না করতে হয়েছে আমাদের!
এসমস্ত ধারণার কাছে নগ্নপ্রায় বসে থাকি আমি
ক্ষয়ে যাওয়া ধোঁয়াশার দেশে রোজ মথপাখি বসে
ভাসে বালুঝড় আর জলের আশঙ্কা
ধারণার দিকে সামান্য-ই কাত হয়ে
বালি বালি খেলা করে আমাদের পোষা কঙ্কাল জীবন
সাহসের বুকে ভর দিয়ে আমিও নিপুণ কারিগরী দক্ষতায় পাখিদের মাথা কেটে আনি
ঠোঁটের ফলকে লিখি মানুষের যন্ত্রণা কেমন,কতটা...
বসন্ত
উপেক্ষার মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে আমি খুঁজে পেয়েছি আশ্চর্য এক গ্রহ
পরীরা এখানে ইচ্ছেমতো পাল্টে যেতে পারে
তাদের আঙুলের মুদ্রায় পলকে ছুটে আসে হাঁস, রঙিন নকশা...
সাদা, ধবধবে সরস্বতী এখানে, সেতারে ক্রমাগত ফুটিয়ে তোলেন বুক চিরে বেরিয়ে যাওয়া একটি পথ...
আগুনের লোভে লোভাতুর পতঙ্গের মতো ছুটে যাই
সে পথ কণ্টকাকীর্ণ, পুষ্পশরেরও
বীণা বাজে
আগুন নিজেও বোঝে কাকে কখন পোড়ানো সহজ...
ছ'টি কবিতাই মন দিয়ে পড়লাম।এ যেন ছয়খন্ড মুক্তো।অসাধারণ লেখাগুলো।তোমার লেখা যত পড়ি তত আবিষ্ট হই এক মোহিনীমায়াজালে।খুব ভালো।খুউব,খুউব ভালো!
ReplyDeleteবেশ ভালো লাগল
ReplyDeleteআলাদা করে কোনো কবিতাকে কমবেশি উজ্জ্বল বলতে পারছি না। ৬টি লেখাই অসাধারণ! রয়ে যাবে। বস্তুত, বেবীকে এর আগে এভাবে কবিতায় পাওয়া যায়নি মনে হয়, অন্য তানে বাঁধা ছিল সুর। প্রতিটি লাইনের সংযুক্তি ও বিভাব এত মোক্ষম! আচ্ছা "উঁবু" তে কি চন্দ্রবিন্দু হবে? অনেক লাইন তুলে লিখব ভেবেছিলাম কিন্তু সবকটা লাইনেই এত ভালো কাব্যিক কুয়াশা ও লহরী যে তা উচিত হবে না। এই লেখাগুচ্ছ একটি সংকলনের জন্য নিলাম যদি আপত্তি না থাকে কবির। আর একটি অনুরোধ এমন লেখা আরও হোক, আরও বেশি বেশি ছাপা হোক। এ সমস্ত অবলোকন ও ধারণার কাছে বোধ নগ্নপ্রায় হয়ে আসে একটি শূন্যতার পরমে পৌঁছোতে চেয়ে।
ReplyDeleteখুব ভালো লেখা। একটা সুর স্রোতের মতো বেজেছে।
ReplyDeleteনমস্কার রইল।
খোলস ভেঙে বেরনোর প্রয়াস আছে, নতুনত্বের আভাস আছে।
ReplyDeleteভালো
ReplyDeleteখুব সুন্দর,
ReplyDeleteআপনার পুরানো লেখাগুলো খুব মিস করি ।
This comment has been removed by the author.
ReplyDeleteখুব ভালো লাগল বেবী। লেখায় নতুন বাঁক এসেছে।
ReplyDeleteখুব ভালো
ReplyDeleteঅপূর্ব সব কবিতা
ReplyDelete