অশনি
আমি যদি নদী হতাম
বুক দিয়ে হেঁটে যেতে পারতাম। আমার কাছের মানুষগুলো চলে যেতে পারত না কারণ যে কোনো পারিবারিক
চাপ জল দিয়ে বুঝে নিতে চায় সামর্থ্য। বুকের ভেতর থেকে গরম চলকে পড়া রক্তের মধ্য দিয়ে
নিয়ে যেতাম মাটি, পাথর, সার। একজন প্রেমিক কৃষক হতে না পেরে দরজা বন্ধ করে কেঁদেছে।
তার ঠা ঠা রোদে পোড়া জমির পাশে দু দন্ড সমতা রাখতে পারতাম। তাকে বার বার পিছন ফিরে
টান বোঝাতে পারতাম। তার কাছে আলো শিখতাম। জলের নিজস্ব অন্ধকার থেকে মুখ তুলে তাকাতাম।
কচুরিপানা, লতাপাতা, দমবন্ধ এই করিডরে সে আমাকে আলো আঁকা শেখাতো। তাকে সত্যবতীর সন্ধান
যদিও দিতাম না। আমার বুকের ভিতরে সে যে আলোর হিজিবিজি কেটে শুষে নিয়েছে সমস্ত কাঠচাঁপা
ফুলের রস তাকে কিছুতেই যেতে দিতে পারি না। আমি তার শেখানো আলো নিয়ে এগিয়ে গেছি। সেই
হতভাগা জমিতে ফুটিয়ে চলেছে চাল, ডাল, বেগুন। আমি বুকে হেঁটে তাদের মাথা ভিজিয়ে খাইয়ে
দিয়েছি পরম মমতায়। আমাদের সন্তান ফেলে আরো এগিয়ে গিয়েছি। দু লাইনের সংসার ছেড়ে আলোর
পিছনে ছুটছি। সে আমাকে আদিগন্ত সীমাহীন জলরাশির ঠিকানা দিয়েছে। একটা মুখোশ পরে আমি
পাহাড় বুকে করে এগিয়ে চলেছি নোনা পানির উপরে। তাকে নিয়ে উবে যাব অনেক উঁচুতে। এত উঁচুতে
যেখানে বরফ ঢাকা মাটির গায়ে মানুষ কতটা তুচ্ছ লেখা, সেখানে গেলে সমতলকে ভুলে যাওয়া
শ্রেয়।
No comments:
Post a Comment