সূর্যগ্রহণ
অনেকদিনের পর মাথার উপরে
উড়তে দেখা গেল একটি শকুন
নীচে একঝাঁক কাক গোল করে ঘিরে রেখেছে
সারা দেশে মারা যাওয়া অসংখ্য মানুষের ভিতর থেকে
খুঁজে পাওয়া এক নিটোল যুবতীর দেহ।
কোথা থেকে শুরু করবে তারা?
শকুনটি নেমে এল
মৃতদেহটির চারপাশে ঘুরে ঘুরে দেখল,
কিছুক্ষণ মুখের উপরে ছায়া রেখে বসল
সেও বুঝতে পারল না।
একটা ঢেউ এল: ভাসিয়ে নিয়ে গেল শব
শকুনের নেতৃত্বে উড়ে উড়ে চেঁচাতে লাগল সমস্ত কাক,
মোমবাতি প্রদীপ ঢাক ঢোল শঙ্খ ঘণ্টা হাতে
রাস্তায় বেরিয়ে পড়ল অবশিষ্ট মানুষ
গ্রহণ লেগেছে সূর্যে।
***
২
রাস্তার ছবি
রাস্তার এক অর্ধনগ্ন পাগলের
ছেঁড়া লুঙির ভিতর থেকে
বেরিয়ে এসে ঝুলতে থাকা
ভাঙা লাল টর্চ লাইটটাকে দেখে
হো হো করে হাততালি দিয়ে
হেসে উঠল একটা মাতাল,
কিন্তু সে নিজে বুঝতে পারেনি যে
তারও চেন কাটা প্যান্টের ভিতর থেকে
উঁকি মারছে বংশের বাতি জ্বালানো
ম্যাগনেট খয়ে যাওয়া একটা লাইটার,
যা দেখে হাসছে আবার এক দিনকানা ফকির
তারও হাতে কাঠি ফুরিয়ে যাওয়া একটা দেশলাই।
***
৩
কাকের সম্মেলন
প্রতিদিন মানুষের মৃত্যু দেখে
হাসি ফুটে ওঠে কাকেদের ঠোঁটে
তারা আয়োজন করতে চলেছে খাদ্য সম্মেলন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এক
প্রবৃদ্ধ শকুন, যে এসেছে তার সুদূর অরণ্য দেশ থেকে,
মৃতদেহের কলিজা ছিঁড়ে খেতে শুরু হল
কাকেদের সমবেত গান,
তাদের মাথায় সব পেঁচার পালক।
গানে গানে নেচে ওঠে ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে থাকা
মড়াদের প্রাণ আর, তীর্থে তীর্থে বেঁচে থাকে
পাথরের শিশ্ন, যোনি।
মৃত্যুর হৃদয় থেকে জন্ম নেয় আরও সব
মুমূর্ষু সন্তান, যারা কাকেদের সম্মেলনে
অগণিত অনাহারী শ্রোতা,
প্রত্যেকের মাথার খুলিতে জ্বলে মোমের প্রদীপ।
No comments:
Post a Comment