অসম্ভব গল্প ১
একজন আমায় অপেক্ষার কথা বলত
আর-একজন তৃণভূমির লুকনো বিষধরের কথা...
তবে দিগন্তে কারা লাল অক্ষরে লিখে দিয়েছিল ‘ফিরতে হবে, তোমায় ফিরতে ঠিক হবেই’
দেখুন, প্রেমটেম, কাতরতা এসব আমি বুঝিনি কোনওদিন।
শুধু জানতাম, ঝড়় উঠলে পাহাড়ের পাইনবনে গুমড়ানো কান্না শোনা যায়।
আর গনগনে দুপুরের বিরুদ্ধে কেউ একটানা অসহায় পাথর ছুড়়ে যায়।
এখন শিখছি, আয়নার ভিতর সুড়়ঙ্গদের চট করে মিলিয়ে যাওয়ার গল্প।
শিখছি শব্দের ভিতর অন্তিম খাদ আর বহু দূরে কোনও রুপোর নদীর স্বপ্ন...
অসম্ভব গল্প ২
এই যে ধরো, আমি রাস্তা দিয়ে দিগভ্রান্তের মতো দৌড়চ্ছি
উন্মত্তের মতো পেরিয়ে যাচ্ছি রাশি-রাশি মৃত পলাশের স্তূপ
ম্যানহোলের ঢাকনায় পা দিলেই বেরিয়ে আসছে গভীর ঝরনারা
এসব পৌঁছব বলেই তো?
কিন্তু জানলার গরাদের ভিতর দিয়ে গাছেরা গলিয়ে দিচ্ছে শিকড়ের আদিম হাতছানি
আর চিল নিখুঁত ঘুরে যাচ্ছে ঘোরতর সূর্যাস্ত পর্যন্ত
কপালে, চিবুকে অকারণে চড়চড় করে উঠছে অবাস্তব ঘামের ফোঁটা
আর একা-একা খটখটে রোদ্দুরের দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে গানের আদর ভাবছ কেন তুমি?
অসম্ভব গল্প ৩
ধরা যাক, ততদিনে শোক বেশ থিতিয়ে এসেছে।
অনেকদিন ধরে দরজায় বাড়ি মেরে-মেরে ফিরে গিয়েছে ক্লান্ত নিরুত্তেজ হাওয়া।
কিন্তু এদিকে পরিত্রাণের রাস্তা ক্রমশ ঢেকে দিচ্ছে সূর্যমুখীর গাঢ়় রং।
এত মিথ্যে অভিমানের গল্প বলতে কেন তুমি?
আর পক্ষীরাজ বসে থাকত সারারাত ছাদের আলসেতে।
ভোরের দিকে ওর নিষ্ঠুর পাখার ঝাপটে আমরা দিন-দিন কুঁকড়ে যাচ্ছিলাম।
অসম্ভব গল্প ৪
চলো, আমরা সম্ভাবনার কথা বলি।
যেমন ধরো, অনেক সাদা পাখি ঘুরে যাচ্ছে ভাঙচুরের জ্যামিতি মেনে।
কিংবা ধরো কারও চোখের তারায় ধরা পড়ছে প্রগাঢ় বিস্ফোরণের শব্দ।
যেমন ধরো, অনেকখানি পাকদণ্ডী বেয়ে নীল গাড়ির হারিয়ে যাওয়ার ক্লিশে গল্প।
যেমন, ভাঙা কাচের উপর হাঁটতে-হাঁটতে পুরনো রক্তের ভিতর মিশে যাওয়ার অথৈ উপশম।
অসম্ভব গল্প ৫
গতজন্মে আমি একটা ভাঙা দুর্গের কথা বলতাম,
এখন তোমার বেপরোয়া অহংকারের কথাই শুধু ভাবি।
ঝোড়ো হাওয়ায় দেওয়ালের ছবি আছাড়িপিছাড়ি খাচ্ছে সারাদিন ধরে।
হাতের মুঠো থেকে অপচয়ের সময় দ্রুত গলে যাচ্ছে আমাদের।
আচ্ছা বলো, নির্দয় বরফ খুঁড়ে কেউ কখনও খুঁজে পাবে আমাদের ছেঁড়াখোঁড়া ক্লিষ্ট পালকগুলো!
আত্মউন্মোচনের বহুস্তরীয় প্রতিভাস শীতল জলের স্নিগ্ধতা জড়ানো
ReplyDelete