Monday, April 13, 2020

অভিজিৎ দত্ত-এর কবিতা




আমাকে জায়গা দেবে
-------------------------------

আমাকে জায়গা দেবে যশোরের সন্ধ্যার ওই মাঠ
যৌথ হরিয়ালি
হৃদয়ের স্মার্ত নীরবতা অগ্নি ও তামসে
একে একে খুলবে কপাট।

অনুপ চণ্ডালের হরিত ভূমায় নেমে
এইসব দীর্ঘ দীর্ঘ জিওল মাঠেরা বাউলকথার মতো
সন্ধ্যারাত্রির আগে আগে ভূ-বিজ্ঞানে
গোপন আত্মপরিচয় লিখে রেখে যাবে।

তারা জানে: অযুত অজাত লুণ্ঠনের দিন, দ্রোহ, ক্ষয়
শেষ হয়ে গেলে, বিনীত সুশীল সম্মানে
মৃত্যুও নিহত এখানে।


একটি অমিথ্যে বিজ্ঞাপন 
-----------------------------------

করোনা ভাইরাস জানে--  চৈত্যকল্পনা ও আগাম-বিষণ্ণতা
বিষয়ে ক'দিন আগে আমার একটি আট ফর্মার কবিতার বই
বেরিয়েছে, যার অক্ষরগুলো পিত্ত অথবা সবুজ রঙের
আর ভাবনাগুলো প্রসন্ন নীল ব্যথাময় শুশ্রূষার।
বলা বাহুল্য, ইদানীং বইটি আমার জীবনচর্যার একমাত্র প্রিল্যুড।

এসব আত্মকবিতা বেগুন ফুলের মতো শান্ত
হাওয়ামোরগের মতো অদৃষ্টের নির্ণয়কারী অথবা বলা যায়
নিমপাতার মতো বায়ুশোধনকারী, পাঠক ছাড়াও
যারা নিজেদের মধ্যে নীরবে নিরন্তর পঠিত হয়ে থাকে।

এই চৈত্রে বাড়ির সামনেটায় কিছু মরশুমি বেগুন
বরবটি টম্যাটো লঙ্কা গাছ লাগিয়েছি
আমার হাতের মুনিরা-আদরে উছলে উঠবে গর্ভের ফসল।
মানুষেরা রাস্তায় আছে, তারা হাঁটছে অনন্তের পথে;
তারাও মানুষ যারা রাস্তায় থাকে, করোনাও জানে।

প্রকাশক সী বুক এজেন্সির কর্ণধার জয়ন্তকে ফোন করলাম
হঠযোগে মাকেও জানালাম: 'জানো, চড়ুই আসছে,
আকাশ বেশ নীল নীল-- গাছপালা কেমন ভেজা ভেজা
করোনার থার্ড স্টেজ এখন, ডিউটিতে বেরোতে হচ্ছে রোজ;
তুমি কেমন আছ মা?'
বুঝলাম মাও সেই আরাধ্যা প্রকৃতিই। নির্ঘুম মধ্যযাম।

প্রভাতী পরিচর্যার সময় আজ আমি একটা ডাঁটো চায়না
বেগুন গাছকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে অনেকক্ষণ অকারণ কাঁদতে দেখলাম!

2 comments:

  1. অসাধারণ দুটি কবিতা। অভিজিৎ দত্ত আমার প্রিয় কবি। তিনি কবিতাকে সার্থক করে তোলেন আগে।
    আমরা যারা কবিতায় নানারকম ফন্দিফিকির আনার চেষ্টা করে যাই, কখনো মুখ থুবড়ে পড়ি, ক্বচিৎ সফল হই, মনে রাখা উচিত যে বিশুদ্ধভাবে কবিতাটাই লিখে যাবার চেষ্টা করেন অভিজিৎ দত্ত।
    তাঁকে ভালোবাসা।

    ReplyDelete

একনজরে

সম্পাদকীয়

একটি বিষয়ে আমাদের সকলের একমত হতেই হবে ভিন্ন মতের ও ভিন্ন রুচির বহুস্তরকে সম্মান জানিয়েও, যে, আমরা এই মুহূর্তে প্রায়শ্চিত্ত করছি। মানুষ...

বেশিবার পড়া হয়েছে যেগুলি